আস্সালামুআলেইকুম কেমেন আছেন সবাই? অনেকদিন পর আপনাদের জন্য আরও একটি লেখা নিয়ে হাজির হলাম। আজকের লেখাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেটা চা পাতার প্যাকেট সমন্ধে বলা হচ্ছে, তাই সবাই মনো+যোগ = মনোযোগ সহকারে পড়বেন আশাকরি। কারন চা পাতার ব্যবসা করলে আপনাকে চা পাতার প্যাকেট ও খোলা চা পাতা সমদ্ধে ভাল জানতে হবে। চলুন মুল আলোচনায় আসি।
চা পাতার প্যাকেট বা চা পাতার মোড়ক
অনেক টি হাউজ ও অনেক ট্রেডার্স বর্তমানে চা পাতার ব্যবসা করতেছেন অবৈধ চা পাতার প্যাকেট নিয়ে। আসলে এইরকম ভাবে ব্যবসা করলে একদিকে যেমন আপনি অবৈধভাবে ব্যবসা করতেছেন অপরদিকে আপনাদের দিন শেষের ফলাফল শূণ্যের জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন।
আপনারা ইতিমধ্যে অবগত আছেন যে চা পাতার ব্যবসা করতে গেলে আপনাকে বাংলাদেশ চা বোর্ড থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। চা প্যাকেট করে বাজারজাত করার জন্য আপনাকে চা বোর্ড থেকে সর্বমোট ৩ টি লাইসেন্স নিতে
আপনারা ইতিমধ্যে অবগত আছেন যে চা পাতার ব্যবসা করতে গেলে আপনাকে বাংলাদেশ চা বোর্ড থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। চা প্যাকেট করে বাজারজাত করার জন্য আপনাকে চা বোর্ড থেকে সর্বমোট ৩ টি লাইসেন্স নিতে হবে
চা প্যাকেট করে বাজারজাত করার জন্য আপনাকে চা বোর্ড থেকে সর্বমোট ৩ টি লাইসেন্স :
- খুচরা ও পাইকারি লাইসেন্স
- বিটার লাইসেন্স
- ব্লেন্ডার লাইসেন্স
আপনি উপরের ৩ টি লাইসেন্স গ্রহন করার পর আপনাকে চা পাতা বাজারজাত করার অনুমোতি দিবে বাংলাদেশ চা বোর্ড। কিন্তুু আপনি তার পরেও চা পাতা প্যাকেট করে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন না । কারন আপনার এখনও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডাডার্স এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই) থেকে সিএম লাইসেন্স বা বিএসটিআই এর অনুমোদন পান নি। আপনাকে সেটিও নিতে হবে। তারপর আপনাকে চা পাতার মোড়ক ডিজাইন করে তার প্রিন্টিং করে বাজার জাত করে চা পাতার ব্যবসা করতে পারবেন।
ঢাকার বাজারে চা নিয়ে চাতুরি ভূয়া প্যাকেটে মানহীন চা পাতার রমরমা ব্যবসা
আপনি যদি বাজারের কেনা প্যাকেট নিয়ে মার্কেটিং করেন তাহলে আপনি যে কোন সময় আইনের আওতায় পড়তে পারেন। আর আইনের আওতায় বাংলাদেশ চা বোর্ড থেকে যদি শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে নগদ ৫ লক্ষ টাকা অথবা সর্বচ্চো ২ বছরের কারাদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। এছাড়া আপনি যদি কারো প্যাকেট নকল করেন তাহলে বাংলাদেশ পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এর আইন -২০০৯ অনুযায়ী আপনাকে সর্বচ্চো ২ বছরের কারাদন্ড কিংবা ২ লক্ষ টাকা কা উভয় দন্ডে আপনি দন্ডিত হবেন।
এছাড়াও আইনের আওতায় আনার জন্য পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের বিভিন্ন ধারা রয়েছে। তাই আপনি যে নামে চা পাতার ব্রান্ডিং করেন সেটি আগে যাচাই করে নিবেন এবং চা পাতার প্যাকেট যেন অন্য কোম্পানির সাথে ৭০% ব্যাতিক্রম থাকে সেটাও দেখে নিবেন। একটি উদাহরন দেই, আমার চা পাতার প্যাকেট এর এখন যদি আমার চা পাতার প্যাকেট এর মত আপনি আপনার যে কোন নামের চা পাতার প্যাকেট তৈরি করেন তাহলে আপনি আইনের আওতায় চলে আসবেন। আমি যদি আমার সকল কাগজ দিয়ে আপনার নামে মামলা করি তাহলে আপনি বাংলাদেশের যে কোথাও থাকুন না কেন আপনি আইনের আওতায় আসবেন এবং আপনাকে শাস্তি পেতে হবে।
উপরে গেল ২ টি শাস্তি, এবার বাংলাদেশ স্ট্যান্ডাডার্স এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই) এর শাস্তির কথা বলি একটু বলি সমপূর্ণ ধারনা নেই, ৪৭ পৃষ্টায় তাদের অনেক আইন রয়েছে। আইনে এমন কিছু আছে যে আপনি তাদের লাইসেন্স ছাড়া চা পাতা কেন অনেক কিছু ব্যবসা করতে পারবেন না। ৪৭ পৃষ্টার মধ্যে আপনাদের চায়ের সুবিধার্থে ছবি দিলাম বুঝার জন্য।
এখন আপনি একবার চোঁখ বন্ধ করে ভাবুন আজ যা চা পাতার অবৈধ প্যাকেট নিয়ে ব্যবসা করতেছেন বা করার চেষ্টা করতেছেন যদি একবার আইনের আওতায় চলে আসেন তাহলে আপনাকে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে তো হবেই এছাড়া জেল ও জরিমানা গুনতে হবে।
আমার ব্যক্তিগত মতামত থেকে বলছি যদি ব্যবসা করতেই চান তাহলে সব কিছু ঠিক করে ব্যবসা করবেন। আর যদি না করতে চান তাহলে আপনি অন্য ব্যবসা খুজে বের করে ব্যবসা পরিচালনা করুন।
প্রশ্ন থাকতে পারে আপনার কাছে যে এই চা পাতার ব্যবসা করতে কতটাকা পূঁজি নিয়ে ব্যবসা করতে হবে.?.?
উত্তর দিব এরকম করে যে_ আপনি যদি চা পাতার প্যাকেট নিজের নামে বের করে ভাল করে ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে সব মিলিয়ে ২০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার মধ্যেই এই ব্যবসা করতে পারবেন। আর যদি কোন টি হাউজ থেকে চা নিয়ে ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার চা নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন। আর যদি আইনের আওতায় এসে চা পাতার ব্যবসা করতে চান তাহলে চকবাজার থেকে ১ কেজি প্যাকেট কিনুন, সাথে ২ হাজার টাকার চা পাতা কিনুন তাহলে ৩ হাজার টাকা দিয়েই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এরপর জেল ও জরিমানার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
আরও প্রশ্ন থাকতে পারে যে আমারা কি চা বিক্রি করি নাকি, নাকি ডিলার দেই.??
আসলে আমরা চা পাতা পাইকারি দামে বিক্রি করি যেমন ৫৫ কেজির বস্তা, নিজেরা ব্লেন্ড করে, অথবা আমাদের প্যাকেট এর মাধ্যমে, কিন্তু ডিলার দেই না। তবে আমরা যদি আমাদের চা কোন থানায় দেই তাহলে অন্য কাউকে আর দেই না। আপনি যদি আরও বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের সাথে এখানে ক্লিক করে যোগাযোগ করে ফোনে বিস্তারিত বলুন।
বলে রাখা ভাল যে চা পাতার ব্যবসা অনেক কষ্টসাধ্য একটা ব্যবসা, যদি কেউ মনে করেন এই ব্যবসা ভাল তাহলে আপনি সব কিছু ভুল বুঝছেন। এই ব্যবসায় যেমন আছে সরকারি আইন ও নীতিমালা ঠিক একটি কোম্পানির চায়ের মান সঠিক রাখার জন্য অনেক পরিশ্রম। আজ এপর্যন্তই, সবাই ভাল থাকবেন ও দোয়া করবেন।
Thank you!!1